কাজ ভালো না হওয়ায় ভেঙে ফেলা হচ্ছে সাড়ে ৫ কোটি টাকার সেতু !
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
২৪-০৭-২০২৫ ০৪:২৬:২৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৪-০৭-২০২৫ ০৪:২৬:২৮ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
পিরোজপুরের নেছারাবাদে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও শিডিউল অনুযায়ী কাজ না করায় একটি গার্ডার সেতু নির্মাণকাজ শেষ না করেই ভেঙে ফেলতে হচ্ছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকাল থেকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) আওতায় ৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সেতুটির ত্রুটিপূর্ণ অংশের অপসারণ শুরু করা হয়েছে।
জানা গেছে, পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার পূর্ব জলাবাড়ি খ্রিস্টান পাড়া থেকে মাদ্রা বাজার সড়কের ওপর একটি প্যাকেজে ২২ ও ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের দুইটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর মেসার্স ইফতি ইটিসিএল প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয় পিরোজপুর এলজিইডি। যার চূক্তি মূল্য ছিল ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
এক বছর তথা ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ব্রিজ দুইটি নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ঠিকাদার হিসেবে কাজ পান পিরোজপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দীন মহারাজের ভাই মিরাজুল ইসলাম। কিন্তু ঠিকাদার মিরাজুল ইসলাম নিজে কাজ না করে একজন সাব কন্ট্রাক্টরকে দিয়ে কাজ করাচ্ছিলেন। তবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও শিডিউল মেনে কাজ না করার কারণে স্থানীয়রা বাধা দেন। পরে আরেক সাব কন্ট্রাক্টর গত বছরের শেষ দিকে গার্ডার ছাড়াই সেতুটির ছাদ ঢালাই দেয়। এর কিছু দিন পরে ঢালাই দেওয়া অংশে ত্রুটি দেখা দেয়। তখন স্থানীয়দের আপত্তির মুখে এলজিইডি তদন্ত করে সেতুটির ঢালাই দেওয়া অংশ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেই অনুযায়ী গত মঙ্গলবার সেতুটির ত্রুটিপূর্ণ অংশটির অপসারণ শুরু করে।
স্থানীয় বাসিন্দা দিপু মিস্ত্রী বলেন, ব্রিজটি চার বছর ধরে দফায় দফায় ঠিকাদার বদলানো হচ্ছে। কাজ শুরুর দিকে নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে ব্রিজ হচ্ছিল। শিডিউল অনুযায়ী উপকরণ না দেওয়ায় ব্রিজের স্ল্যাব ফেটে যায়। পরে কাজ রেখে সরে যান ঠিকাদার। পুনরায় এটা সংস্কারের জন্য আসে। সংস্কার শুরুর আগেই পুরো ব্রিজে ভেঙে খালের মধ্যে পড়ে। যে কারণে এখানকার মানুষ এখন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং এলজিইডির কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সেতু নির্মাণে অকল্পনীয় দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে।
নেছারাবাদ উপজেলা প্রকৌশলী রায়সুল ইসলাম বলেন, কাজ নিয়ম অনুযায়ী না করার কারণে পুরো স্ল্যাব (ছাদ) ভেঙে নতুনভাবে নির্মাণকাজ করতে হবে। এ ছাড়া মূল ঠিকাদারকে পাওয়া না যাওয়ায় কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, পিরোজপুর এলজিইডি থেকে কাজ না করেই কয়েক হাজার কোটি আত্মসাৎ করে মিরাজুল ইসলাম এবং তার সহযোগীরা। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আত্মগোপনে রয়েছেন মিরাজুল ইসলাম।
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স